কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম। কালোজিরা,আমরা সবাই জানি কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে। কিন্তু খাওয়া সঠিক নিয়ম না জানার কারণে কালোজিরার পর্যাপ্ত উপকার পাই না। কালোজিরা আপনি যেকোনো ভাবেই খেতে পারেন,যেকোনো ভাবে খেলেই আপনি কালোজিরার উপকার পাবেন। কিন্তু এর কিছু কিছু রোগ অনুযায়ী কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম আছে।
আমাদের মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স:) কালোজিরা নিয়ে বেশ আলোচনা করতেন এবং সাহাবীদের কালোজিরা খাওয়ার উপদেশ দিতেন।
তিনি বলতেন একমাত্র মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের ওষুধ হিসেবে কালোজিরা ব্যবহার করা যায়।
আসুন জেনে নেই কালোজিরা খাওয়ার কিছু নিয়ম:
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কাআলোজিরা খাওয়ার অনেক নিয়ম আছে। কালোজিরা কাচা চিবিয়ে এবং কোনো পিষে খাওয়া যায়।
রসুন, পুদিনা পাতা,তুলসী,হলুদ এবং মধু এইগুলার সাথে মিশিয়ে আপনি কালোজিরা খেতে পারেন। এইসব প্রাকৃতিক উপাদানে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এইগুলার সাথে কালোজিরা মিক্স করে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
কালোজিরা হালকা করে ভেজে নিয়ে পিষে নিয়ে পরিমাণ মত লবণ মরিচ দিয়ে ভর্তা করে খেতে পারলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
শিশু জন্মের পর শিশুর মা কালোজিরা ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে পারলে ক্ষত স্থানে জন্যে বিশেষ উপকার পাবে।
চুলকানি বা এলার্জি জনিত রোগীদের জন্য কালোজিরা খুব উপকারী। কালোজিরা গুঁড়ো করে পেয়ারা পাতার রস করে একসাথে খেতে পারলে এলার্জির খুব উপকার পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা দুর করতে ও কালোজিরার ভূমিকা রয়েছে। কালোজিরা গুঁড়ো করে এক কাপ পুদিনা পাতার রস এবং কমলার রস মিক্স করে প্রতিদিন খেলে দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে।
সর্দি কাশি দূর করতেও কালোজিরার কার্যকরী ক্ষমতা হয়েছে। কালোজিরা গুঁড়ো করে মধুর সাথে মিক্স করে খেলে সর্দি কাশি ভালো হয়ে যায়।
আবার কালোজিরা রুমালে অথবা শুকনো কাপড়ে মুড়ে কিছুটা ডলে তার ঘ্রাণ নিলে সর্দি খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।
কালোজিরার তেল করে মধুর সাথে মিক্স করে প্রতিদিন শরীর মালিশ করলে শরীরে সকল প্রকার ব্যাথা দুর হয়ে যাবে।
পেটের পীড়া দুর করতে কালোজিরার বিশেষ ভূমিকা রাখে। কালোজিরা হালকা ভেজে নিয়ে সেইগুলোকে গুঁড়ো করে সকালবেলা খালি পেটে মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে পেটের পীড়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
More: অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
আপনি যদি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে খুব চিন্তায় থাকেন তাহলে কালোজিরার খাওয়া র এই নিয়মটি শুধু আপনার জন্যে,
কালোজিরা ভেজে নিয়ে গুড়ো করে লেবুর রস এবং মধু দিয়ে একটু মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এবং সেই মিশ্রণটি প্রতিদিন অন্তত দুইবার করে খেলে খুব তাড়াতাড়ি আপনার ওজন কমে যাবে।
আবার লেবুর রসে কালোজিরা কিছুক্ষন ভিজিয়ে সেই কালোজিরা আবার রোডে শুকিয়ে নিয়মিত খেলে ওজন খুব তাড়াতাড়ি হ্রাস পাবে।
মাথা ব্যাথা দুর করতেও কিন্তু কালোজিরা খাওয়া যায়।
এই ক্ষেত্রে আমাদের কালোজিরার সাথে রসুন যুক্ত করতে হবে। আমরা রান্না করা রসুন দিয়ে কালোজিরা ভেজে ভর্তা করে খেলে অথবা কাচা রসুন পিষে কালোজিরা দিয়ে ভর্তা করে খেলে মাথা ব্যাথা দুর হয়ে যাবে। (কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম )
হার্টের বিভিন্ন সমস্যা দুর করতে কালোজিরা গুঁড়া করে এক চা চামচ কালোজিরা গুরার সাথে এক কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন খেতে পারলে এক মাসের মধ্যে এই ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
বাতের ব্যাথা দূর করতে কালোজিরার তেল বিশেষ উপকারী। ব্যাথার জায়গায় ভালো করে পরিষ্কার করে কালোজিরার তেলের সাথে সরিষা তেল মিশিয়ে প্রতিদিন মালিশ করলে বাতের ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
পাইলস এর সমস্যা দূর করতে কালোজিরা খুব কার্যকরী। এক চা চামচ কালোজিরার সাথে এক চামচ মাখন ও এক চা চামচ তিলের তেল মিশিয়ে প্রতিদিন খালি খেলে 15 দিনের মধ্যেই পাইলসের জন্যে উপকার পাওয়া যাবে।
শ্বাস কষ্ট বা হাপানি দুর করার জন্যেও কালোজিরা খাওয়া যায়। প্রতিদিন কালোজিরা ভর্তা খেতে পারলে শ্বাস কষ্ট বা হাপানি থেকে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা বেশ কার্যকরী। এক গ্লাস পানির সাথে সামান্য পরিমাণ কালোজিরা মিশিয়ে রোজ খালি পেটে খেলে রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
যৌণ সমস্যা দূর করতে ছেলে মেয়ের উভয়েই কালোজিরা খেতে পারেন। খাবারের সাথে প্রতিদিন কালোজিরা খেলে পুরুষের স্পার্ম বৃদ্ধি পায় তার সাথে পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এক চা চামচ জাইতুন তেল ,এক চা চামচ মাখন, এবং সমপরিমাণ কালোজিরা ও মধু প্রতিদিন তিন বার খেলে এক মাসের মধ্যে এর উপকার পাওয়া যাবে।
অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সমাধান করতেও কালোজিরা খাওয়া যায়। কাচা হলুদ রস করে এক কাপ হলুদের রস অথবা এক কাপ আতপ চাল ধোয়া পানি এবং এক চা চামচ কালোজিরা তেল মিশিয়ে প্রতিদিন তিন বার খেলে এই উপকার বোঝা যাবে।
মাতৃ স্তনে দূধ বৃদ্ধির জন্যেও এটা খুব কার্যকর। যেসব মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দূধ নাই তারা প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে 5-10 গ্রাম কালোজিরা গুঁড়া হালকা গরম দুধের সাথে খেলে 15 দিন এর মধ্যে বুকের দূধ বৃদ্ধি পাবে।
আরো- হলুদের 15টি চমৎকার উপকারিতা ও কাঁচা হলুদ খাওয়ার নিয়ম
আমাশয় নিরাময় কালোজিরার ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীন কাল থেকে। এক চা চামচ মধু এবং সমপরিমাণ কালোজিরার তেল প্রতিদিন তিন বার খেলে 10-15 দিন এর মধ্যে আমাশয় দুর হয়ে যাবে।
#Topic: কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
এই আর্টিকেল এ কালো জিরা খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা নিয়ে এই আর্টিকেল লিখে হয়েছে। আপনার যদি কোন মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট করে যানাবেন।